বৃষ্টি মাথায় রাজ্যপালের দুয়ারে বিজেপি, বাম তার সাথে কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা

Staff Reporter

বৃষ্টি মাথায় রাজ্যপালের দুয়ারে বিজেপি, বাম তার সাথে কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা, কটাক্ষ শাসক তৃণমূলের

রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সাথে লক্ষ্য করার জন্য কোচবিহার সার্কিট হাউসে গেল বিজেপির দল। এছাড়া বাম তার সাথে কংগ্রেসের প্রতিনিধিরাও রাজ্যপালের সাথে কথা বলতে যান সকালে।

সকাল থেকেই কোচবিহার সার্কিট হাউসের সামনে ছাতার ভিড়। এঁদের কেউ বিজেপির বিধায়ক, কেউ প্রার্থী আবার কেউ কংগ্রেস এবং সিপিএমের নেতা-কর্মী এবং পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থী। পঞ্চায়েত ভোটের আগে ‘অশান্ত’ কোচবিহারকে শান্ত করতে শুক্রবার রাতে রাজ্যপাল মেসেজ দেওয়ার পরেই সকাল বেলা হতে তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য ভিড় জমিয়েছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিরা। সকলেই চান, পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে যে ‘হিংসা’র ঘটনা ঘটছে, সেই পরিস্থিতির কথা বোসকে জানাতে। শাসকদলের বিরুদ্ধে কমপ্লেইন জানাতে সকালেই বিজেপির পাঁচ বিধায়কের ১টি দল সার্কিট হাউসে প্রবেশ করেন।

তাঁদের পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকও সার্কিট হাউসে ঢুকেছেন রাজ্যপালের সাথে লক্ষ্য করতে। সূত্রের খবর, রাজ্যপাল সার্কিট হাউসের এই সাক্ষাৎপর্ব শেষ করে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে যাবেন। ওখান সন্ত্রাসে আক্রান্ত অল্পসংখ্যক জন রাজনৈতিক কর্মীর সঙ্গে লক্ষ্য করবেন তিনি। তার পর সেখান হতে তিনি যাবেন দিনহাটায় সন্ত্রাস কবলিত অঞ্চল পরিদর্শনে। যদিও সব দেখেশুনে রাজ্যপালকে নিশানা করেছে তৃণমূল। পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজ্যপালের ‘অতি সক্রিয়তা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তারা।

Advertisement

বুধবারই রাজ্যপালের কোচবিহারে প্রবল বৃষ্টিপাত কথা ছিল। তবুও ভালো না আবহাওয়ার কারণে তাঁর সফর বাতিল হয়ে যায়। অথচ শুক্রবার রাত্রিতে আচমকাই কোচবিহার রওনা হন রাজ্যপাল। কোচবিহার সার্কিট হাউস পৌঁছেই উনি তড়িঘড়ি সাংবাদিক বৈঠক করেন। তিনি জানান, রাজ্যে আর অশান্তি বরদাস্ত নয়। কোচবিহারকেও শান্ত দেখতে চান। তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন। চাইলে সমস্ত রাজনৈতিক টিমের প্রতিনিধিরা তাঁর সঙ্গে লক্ষ্য করতে পারেন। উনি নালিশ বা কথ্য শুনবেন। একসাথে ‘অশান্ত’ দিনহাটা যাওয়ার রাস্তায় সাধারণ মানুষও চাইলে কমপ্লেইন জানাতে পারবেন। রাজ্যপালের এই মেসেজের পর শনিবার সকালেই নোটিশ গেল কোচবিহার সার্কিট হাউসের সম্মুখে নানা রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের। বিজেপি অবশ্য আগেই জানিয়েছিল, যে তারা রাজ্যপালের সাথে লক্ষ্য করে ‘হিংসার ইতিহাস’ জানাবেন। সকালে দেখা গেল রাজ্যপালের সঙ্গে লক্ষ্য করার জন্য শশব্যস্ত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীও।

উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট পাবলিশ ইস্তক রাজ্যের যে যে জায়গায় অশান্তির বার্তা মিলেছে, তাদের ভিতরে ‘অন্যতম’ কোচবিহার। জেলার দিনহাটায় বার বার বিজেপি এবং তৃণমূলের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সিপিএম প্রার্থীদের মনোনয়নে বাধা দেওয়ার নালিশ উঠেছে। দিনহাটার গীতালদহে গুলিতে এক জনের মৃত্যুও হয়েছে। তৃণমূলের দাবি, মৃত লোক তাদের কর্মী। শনিবার রাজ্যপালের সঙ্গে যখন বিরোধীরা দেখা করার জন্য ভিড় জমাচ্ছেন, সেই সময় কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।

রাজ্যপালের সাথে বিরোধীদের সাক্ষাৎপর্ব নিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র পার্থ প্রতিম রায় বলেন, ‘‘আহতদের দেখতে যাবেন। নিহতদের ফেমেলির সাথে কি দেখা করতে যাবেন না? আমাদের তৃণমূলের এক কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর পরিবারের সঙ্গে লক্ষ্য করতে যাবেন কি না জানি না। কারণ, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক ওনাকে চোরাচালান কারবারি বলে দাগিয়ে দিয়েছেন।’’ তৃণমূল নেতার সংযুক্তি, ‘‘বিএসএফও কোচবিহারের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে তৃণমূলকে ভোটপ্রচারে বাধা দিচ্ছে। সে নিয়ে রাজ্যপালের অবদান হবে?’’ তৃণমূল নেতার দাবি, যুক্তরাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে ভেঙে ফেলতে চায় বিজেপি। কেন্দ্রীয় সংগঠন দিয়ে নানা ভাবে তৃণমূলকে হেনস্থার ট্রাই হয়েছে। আজকাল পঞ্চায়েত ভোটের মুখে রাজ্যপাল কেন এত সক্রিয়, সেটাও প্রশ্নের।

Advertisement

আরও পড়ুন

Latest articles

Leave a Comment

%d bloggers like this: