জোরাল হচ্ছে ইস্তফার দাবি

Staff Reporter

জোরাল হচ্ছে ইস্তফার দাবি, তবে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেনকে বিজেপি এখনই সরাচ্ছে না

কেবল কুকি, জ়োর মতো খ্রিস্টান জনজাতি গোষ্ঠীগুলি নয়, মণিপুরে দীর্ঘ আড়াই মাসের হিংসাপর্বে মুখ্যমন্ত্রী বীরেনের ‘ভূমিকা’ নিয়ে নালিশ তুলেছে তাঁর স্বজাতি হিন্দু মেইতেইরাও।

মণিপুরে দুই নারীকে করে পথে ঘোরানোর ঘটনার ভিডিয়ো (যার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) তার সাথে গণধর্ষণের কমপ্লেইন ঘিরে দেশ জুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে বিতর্ক। সেই সঙ্গেই আবার নতুন করে আলোচনায় এসেছে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের ইস্তফার সম্ভাবনার কথা। যদিও বিজেপির ১টি সূত্র জানিয়েছে, এখনই বীরেনকে সরানোর কথা ভাবা হলো না।

বরং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বীরেনকে পদে রেখেই কুকি-সহ পাহাড়ের জনজাতি গোষ্ঠীগুলির আস্থাবর্ধনের চেষ্টা শুরু করার ডিসিশন নিয়েছে। রমণী জুলিমের ওই ঘটনার ৭৭ দিন পরেও পুলিশ কেন কোনও অ্যারেঞ্জমেন্ট নেয়নি, তা জানতে বীরেনের নিকট কৈফিয়ত তলব করা হতে পারে বলে টিমের একটি সূত্রের খবর।

Advertisement

শুধু কুকি, জ়োরের মতো খ্রিস্টান জনজাতি গোষ্ঠীগুলি নয়, মণিপুরে দীর্ঘ আড়াই মাসের হিংসাপর্বে মুখ্যমন্ত্রী বীরেনের ‘ভূমিকা’ নিয়ে অভিযোগ তুলেছে তাঁর স্বজাতি হিন্দু মেইতেইরাও। কুকি-সহ জনজাতি গোষ্ঠীগুলির অভিযোগ, গত এক মাসের গোষ্ঠীহিংসার সময়ে বীরেনের রাষ্ট্রের চালচলন পুরোপুরি পক্ষপাতদুষ্ট।

জনজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলগুলিতে সিকিউরিটির ব্যাপারটা মণিপুর রাষ্ট্রশাসক বিভাগ হেলা করেছে বলে অভিযোগ তুলে ওই অঞ্চলে ‘পৃথক প্রশাসনের’ দাবি তুলেছে তারা। অন্য দিকে, রাজধানী ইম্ফল-সহ সমতল অঞ্চলে বৃহত্তম মেইতেইদের অভিযোগ, মায়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে হামলা চালানো কুকি জঙ্গিদের মোকাবিলায় সময়োচিত পদক্ষেপ করেনি বীরেনের পুলিশ।

এই পরিস্থিতিতে বীরেনকে মুখ্যমন্ত্রী পদ হতে সরানো হতে পারে বলে কতিপয় দিন ধরেই জল্পনা সৃষ্টি হয়েছিল। বিজেপির একটি সূত্র জানাচ্ছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মণিপুর সফরের সময়েও ব্যাপারটা আলোচনায় এসেছিল। প্রভাবশালী বিজেপি বিধায়ক থোংগাম বিশ্বজিৎ সিংহ, রঘুমণি সিংহ-সহ পরিষদীয় টিমের অনেকেই বীরেনের নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেন টিমের অন্দরে।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে গত ৩০ জন তাঁর ইস্তফার সম্ভাবনা ঘিরে নিউ ‘নাটক’ লক্ষ্য গিয়েছিল ইম্ফলে। পদত্যাগপত্র নিয়ে রাজভবনের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন বীরেন। তা সত্ত্বেও পথেই সমর্থক তার সাথে অনুগামীদের চাপে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার কথা জানান তিনি। এমনকি, রাজ্যপালের নিকট যে ইস্তফাপত্রটি উনি দাখিল করতে যাচ্ছিলেন, সেটিও ছিঁড়ে ফেলা হয়।

তবে মণিপুরে ধারাবাহিক হিংসা মোকাবিলায় ব্যর্থতার জন্য কেবল বীরেনকে কাঠগড়ায় তোলা যায় না বলেই বিজেপির একটি অংশ মনে করছে। কারণ, গত গত ৩ মে মণিপুরের জনজাতি শিক্ষার্থী সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর বিক্ষোভ-মিছিল ঘিরে উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে অশান্তির সূত্রপাত হওয়ার পরেই নিরাপত্তার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিল কেন্দ্র।

সামগ্রিক নিরাপত্তা অ্যারেঞ্জমেন্ট তদারকের ভার দেওয়া হয় সিআরপিএফের প্রাক্তন সেরা কুলদীপ সিংহকে। তাঁর অধীনে এডিজিপি (ইন্টেলিজেন্স) আশুতোষ সিংহ গোটা সিকিউরিটি ব্যবস্থার অপারেশনাল কমান্ডার হিসেবে কাজ করছেন। অথচ মণিপুরে যুযুধান মেইতেই এবং কুকি জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন সংগঠন ইতিমধ্যেই বিজেপি চালিত রাজ্য গর্ভনমেন্টের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রতি অনাস্থা পাবলিশ করেছে।

Advertisement

এমনকি, কুকিরা পৃথক রাজ্যের দাবিও তুলেছে। গুরুত্বপূর্ণ ভাবে সেই দাবিতে ইন্ধন জুগিয়েছেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপির সহযোগী দল মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্টের প্রধান জোরামথাঙ্গা।

আরও পড়ুন

Latest articles

Leave a Comment

%d bloggers like this: