বুধবার বিএসএফের আইজির তরফে অতুলনীয় বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে পঞ্চায়েত ইলেকশন নিয়ে রিপোর্ট জমা দেন কেন্দ্রের এক্সট্রা সলিসিটর জেনারেল।
পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক ‘হিংসা’র ঘটনায় কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে রিপোর্ট জমা দিলেন পশ্চিমবঙ্গ সেক্টরের বিএসএফ আইজি তথা কেন্দ্রীয় বাহিনীর নোডাল অফিসার এস সি বুদাকোটি। বুধবার বিএসএফের আইজির তরফে অতুলনীয় বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম তার সাথে বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে পঞ্চায়েত ইলেকশন নিয়ে রিপোর্ট জমা দেন কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল (এএসজি) অশোককুমার চক্রবর্তী।
পঞ্চায়েত ভোটে রেষারেষি নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এবং কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরীর (ডালু) আদালত অবমাননার মামলার শুনানিতে বুধবার বিএসএফের আইজি যে রিপোর্ট দিয়েছেন, তা নিয়ে রাজ্য নির্বাচন ডিস্কাউন্ট তার সাথে রাজ্যকে আগামী ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে জবাব দিতে হবে বলে জানিয়েছে হ্যালো কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী ২৬ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা ঠেকাতে হ্যালো কোর্টের নির্দেশ ছিল, মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, বিএসএফ আইজি, ডিজি, এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) বসে বাহিনী মোতায়েন নিয়ে বৈঠক করবেন। কোথায় কোথায় বাহিনী থাকবে সিদ্ধান্ত নেবেন। জেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় থানাকে সাহায্য করতে হবে। বুধবার শুনানি পর্বে এএসজি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে নির্ভুল সময়ে সহযোগিতা করেনি কমিশন। ভোটের দিন স্পর্শকাতর এলাকায় বাহিনী মোতায়েন করা হয়নি। পরিকল্পনা না থাকায় অন্যত্র বাহিনী চলে যায়।’’
প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম সে টাইম বলেন, ‘‘রিপোর্ট দেখে সঠিক বলেই মনে হচ্ছে। দূর থেকে বাহিনী এসেও বসে ছিল। কমিশনের উচিত ছিল সততার সাথে কাজ করা। আপনি যদি আদালতের আদেশ গ্রহণ করে নেন, কিন্তু তা কার্যকর করতে হবে। না হলে চ্যালেঞ্জ করার জন্য পারতেন। খুবই দুঃখের বিষয় এত ক্ষতি হয়ে গেল। রিপোর্ট প্রকৃতপক্ষে হলে বলতে হবে নির্দেশ ইচ্ছাকৃত ভাবে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করা হয়েছে।’’
এর পরেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘কী ভাবে আপনাদের ভূমিকা ব্যাখ্যা করব তা বুঝতে পারছি না। আপনাদের কোনও কাজে বিচারালয় হস্তক্ষেপ করেনি। আপনারা যা যা বলেছেন সব মেনে নিয়েছি। কেবল কেন্দ্রীয় বাহিনীর আদেশ দিয়েছিলাম। একটা ছাতা দিয়েছিলাম। সেই ছাতাও কারও সাথে শেয়ার করেননি।’’
আদালতের নির্দেশ মতো এখনও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়নি কেন, তা জানার জন্য রাজ্যের মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দেওয়ার জন্য হাই কোর্টের নিকট আবেদন জানিয়ে দেন এসএসজি। তার প্রেক্ষিতে উৎকৃষ্ট বিচারপতি বলেন, ‘‘রাজ্য পুলিশের ডিজি, এসপি কেউ আদেশ পালন না করলে মুশকিল। আমি কলকাতার রাস্তাঘাট চিনি না। আমার চালক আমাকে এখানে নিয়ে এসেছেন। এটা তাঁর কাজ। তবুও চিংড়িঘাটা আমি চিনি। যেখানে আমি চিনি না ওই জায়গা তো হেল্প করা উচিত। মোতায়েনের (কেন্দ্রীয় বাহিনী) প্রিপারেশন সঠিক ছিল না, এটি পরিষ্কার।’’
পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সেরা বিচারপতি। উনি বলেন, ‘‘আপনারাও হেল্প করেননি। কমিশনও করেনি। তাই আমাদেরও আমাদের কাজ করা উচিত।” আদালতের আগের আদেশ মতো এইরকম ১০ দিন রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। এই সিচুয়েশনে হাই কোর্টের নজরদারি রাজ্য নির্বাচন ডিস্কাউন্ট তার সাথে রাজ্য গর্ভনমেন্টের অস্বস্তি বাড়ালো বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।