বিধানসভা সূত্রে খবর, আগামী সোমবার সাধারণ রাজ্যসভা ইলেকশনে ছয় জন এবং উপনির্বাচনে এক জন প্রার্থীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ের শংসাপত্র দেওয়া হবে।
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যসভার ইলেকশনে মনোনয়ন প্রত্যাহার করলেন বিজেপির ডামি প্রার্থী রথীন্দ্র বসু। শনিবার ছিল রাজ্যসভার ভোটে মনোনয়ন প্রত্যাহারের সম্পন্ন দিন। শনিবার বিধানসভায় এসে সহ-সচিবের কাছে নিজের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি। আর তার পরেই স্পষ্ট হয়ে যায়, আগামী ২৪ জুলাই বিধানসভায় আর রাজ্যসভা নির্বাচনের আসর বসবে না। মনোনয়ন জমা দেওয়া প্রার্থীরা বিনা প্রতিন্দ্বিতায় জয়লাভকারী হয়ে রাজ্যসভার সাংসদ হবেন। বিধানসভা সূত্রে খবর, আগামী সোমবার সাধারণ রাজ্যসভা ইলেকশনে ছয় জন তার সাথে উপনির্বাচনে এক জন প্রার্থীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের শংসাপত্র দেওয়া হবে।
রথীন্দ্রর মনোনয়ন প্রত্যাহারের পর বিজেপি পরিষদীয় দল সূত্রে জানানো হয়েছে, কৌশলগত কারণেই ডামি প্রার্থী দিয়েছিল তাঁরা। শুক্রবার ছিল রাজ্যসভা ভোটের স্ক্রুটিনিপর্ব। সেই পর্বে তৃণমূলের ছয় জন প্রার্থী-সহ বিজেপির অনন্ত মহারাজ তার সাথে ডামি প্রার্থী রথীন্দ্রের মনোনয়ন গৃহিত হয়। তার পরেই গেরুয়া শিবির শনিবারেই ডামি প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়। নাটাবাড়ির বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামী বলেন, ‘‘দল একটা এক্সট্রা প্রার্থী দিয়ে রেখেছিল। এই ধরনের প্রার্থী প্রধারনত ইলেকশনের দেওয়া হয়ে থাকে। প্রার্থী নিয়ে শেষ পর্যন্ত কোনও সমস্যা হলে, যাতে বিকল্প অ্যারেঞ্জমেন্ট রাখা যায়, সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দল।
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিন আমাদের ডামি প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় আর ইলেকশনের সুযোগ রইল না।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘অনন্ত মহারাজ কোচবিহারের বাসিন্দা। উনি উত্তরবঙ্গে বহু সামাজিক পাল্টানোর কাজ করেছেন। এইজন্য তাঁর মতো এক জন ব্যক্তিকে বিজেপি রাজ্যসভার মেম্বার হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ায় আমরা গর্বিত।’’ প্রসঙ্গত, ১৯৮০ সালে বিজেপি গঠনের পর এই প্রথম বাংলা হতে কোনও রাজ্যসভার সাংসদ পাবে গেরুয়া শিবির।
সেই ডিসিশন মেনেই শনিবার বিধানসভায় এসে নিজের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন রথীন্দ্র। উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার বিধানসভায় বিজেপির রাজ্যসভার প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান অসীম মহারাজ। কিন্তু তা সত্ত্বেও অতিরিক্ত এক জন প্রার্থীর মনোনয়ন দেওয়ার ডিসিশন নেন বিজেপি নেতৃত্ব। সেই মতো অনন্তর মনোনয়ন জমা দেওয়া সম্পন্ন হলে বিজেপির পক্ষ থেকে মনোনয়ন জমা দেন রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি রথীন্দ্র। তিনিও উত্তরবঙ্গের ভূমিপুত্র। তাঁকেই ডামি প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করায় বিজেপি। তা সত্ত্বেও উনি নিজের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় আর ভোটের অবসর নেই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যসভা নির্বাচনে।
রথীন্দ্র সরে দাঁড়ানোয়, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হবেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক-ও-ব্রায়েন, উপদলনেতা সুখেন্দুশেখর রায়, কর্মচারী সংগঠনের নেত্রী দোলা সেন, অধ্যাপক সামিরুল ইসলাম তার সাথে আলিপুরদুয়ার তৃণমূলের জেলা সভাপতি প্রকাশ বড়াইক। আর এই ১ম পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ হচ্ছেন। সেই আসনে বিজয়ী হয়ে রাজ্যসভায় যাবেন অনন্ত। আর যে একটি আসনে উপনির্বাচনের জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল নির্বাচন কমিশন। সেই আসনেও বিনা প্রতিন্দ্বিতায় জয়ী হবেন দিল্লির অধিবাসী তথা সমাজকর্মী সাকেত গোখলে।